সাংবাদিকরাই সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ

ঠিকানা রিপোর্ট : বাংলাদেশে বর্তমানে সত্যিকারের গণতন্ত্র, আইনের শাসন অনুপস্থিত। বিচার বিভাগ এবং গণমাধ্যমও পূর্ণ স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণেই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা-বিচারসহ সব স্তরেই এখন চরম এক অনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে। আর এজন্য স্ব স্ব পেশায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টরাই দায়ি। এমনই মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও প্রবীণ সাংবাদিক এডভোকেট তবারক হোসাইন।
গত ২৬ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার, নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক দেশ বাংলা ও বাংলা টাইমস অফিসে টাইম টিভি ও সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সৌজন্যে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বাংলা পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহেরের সঞ্চালনায় সভায় দেশ ও প্রবাসের সমসাময়িক বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন সাবেক এমপি ও সাপ্তাহিক ঠিকানা পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এম এম শাহীন, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমূল আহসান, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ও নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক মনজুর আহমদ, প্রধান সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ জিকো, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, প্রথম আলো’র উত্তর আমেরিকার ব্যুরো প্রধান ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন, সাপ্তাহিক দেশকণ্ঠ সম্পাদক দর্পণ কবীর, নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম, হককথা সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইয়র্ক বাংলা সম্পাদক রশীদ আহমদ, দি সিটিজেন টাইম প্রতিনিধি ও নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল, প্রচার সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শাহেদ আলম, মনজুরুল হক প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো’র ফটো সাংবাদিক এ হাই স্বপন, বাংলা নিউজ ইউএসএ’র মাহফুজ আদনান, প্রথম আলো’র তোফাজ্জল হোসেন ও বাংলা টাইমস-এর সাহিত্য সম্পাদিকা শাহীন আক্তার মৌসহ নিউইয়র্কের ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার বেশ ক’জন সাংবাদিক।
দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এখন ঈশারা-ইঙ্গিতে কথা বলতে হয়। সর্বাধুনিক মিডিয়ার যুগে সবকিছু দেখে-শুনে-বুঝেও মুখ খোলা যায় না।
এজন্যে আমরা সর্বস্তরের পেশাজীবীরাই দায়ী উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আজ বাংলাদেশে সাংবাদিকরাই সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ। সবাই আইন-কানুন, নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে কেবল অর্থ ও ক্ষমতার পেছনেই ছুটছে। এ জন্যে এক সময় দেশ ও জাতিকে অবশ্যই কঠিন মূল্য দিতে হবে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও প্রবীণ সাংবাদিক এডভোকেট তবারক হোসাইন বলেন, দেশে বর্তমানে এক ভয়াবহ গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে। সব কথা মুখ ফুটে বলা যায় না। বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতিকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিককালে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেশবাসী দেখতে পেলো, তাতেই দেশের গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ তাদেও কাছে পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে প্রকৃত আইনের শাসন থাকায় মানুষ স্বাধীনভাবে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের চর্চা করতে পারছে। কিন্তু বাংলাদেশ নামক ‘স্বাধীন’ ভূখ-ে সত্যিকারের গণতন্ত্র ও আইনের শাসন না থাকায় জনগণ কোন ক্ষেত্রেই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারছে না।