‘সাত রাজার ধন’ পেল পাকিস্তান

বিশ্বচরাচর ডেস্ক : সফরের প্রথম দিন পাকিস্তানের সঙ্গে ২ হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। রাত পোহাতেই আরেক খুশির সংবাদ। সৌদি আরবে বন্দী প্রায় ২ হাজার পাকিস্তানি বন্দীকে মুক্তির বার্তা দিলেন যুবরাজ। বিধ্বস্ত অর্থনীতি চাঙা করতে এ দুটিরই প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের। নাজুক পরিস্থিতিতে ২ হাজার কোটি বড় অঙ্ক। আর প্রবাসী আয় বাড়াতে বন্দী পাকিস্তানিদের মুক্ত হওয়াটাও ছিল জরুরি। যেন ‘সাত রাজার ধন’ পেল পাকিস্তান। আর এতকিছু পেতেই নয়া আপ্যায়ন ক‚টনীতি দেখালেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। প্রটোকল ভেঙে নিজেই গাড়ি চালিয়ে রাওয়ালপিন্ডির বিমানবন্দর থেকে যুবরাজকে প্রধানমন্ত্রী ভবনে নিয়ে যান তিনি। অভিনব আপ্যায়নে খুশি যুবরাজ পাকিস্তানের ‘রাষ্ট্রদূত’ হিসেবে কাজ করতে চেয়েছেন

ডন জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ভারতের উদ্দেশে ইসলামাবাদ ছাড়েন। এরপর চীনে যাবেন তিনি। যুবরাজ জানিয়েছেন, ২০ বিলিয়ন ডলার অঙ্কটির মাধ্যমে শুধু একটি অর্থনৈতিক সম্পর্কের শুরু। এর মধ্য দিয়ে সৌদি ও পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক মিত্রতা আরও গভীর হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা পাকিস্তানের ভাইয়ের মতো, বন্ধুর মতো। ভালো সময় থেকে শুরু করে কঠিন সময়েও আমরা একসঙ্গে চলেছি এবং চলব। প্রতি ছয় মাসে আমাদের মন্ত্রীদের মধ্যে সাক্ষাৎ হবে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান এক টুইটে বলেন, পাকিস্তানিদের মন জয় করে নিয়েছেন যুবরাজ।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সৌদি যুবরাজকে বহনকারী উড়োজাহাজ পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশের পর দেশটির বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো ওই উড়োজাহাজটিকে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসে। বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়ে স্বাগত জানান ইমরান ও সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। এখান থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে ক্রাউন প্রিন্সকে ইসলামাবাদে নিয়ে যান ইমরান। রাতেই দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বৈঠকে ইমরান বলেন, ‘প্রয়োজনের সময় সৌদি আরব সবসময়ই বন্ধুর মতো পাশে থেকেছে, তাই এ বন্ধুত্বকে আমরা এত মূল্য দেই।’ পাকিস্তানকে যুবরাজের ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ বানানোর প্রস্তাব দেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘আপনি যখনই পাকিস্তানে আসবেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে থাকবেন। এটাই আপনার দ্বিতীয় আবাসস্থল।’ জবাবে যুবরাজ বলেন, আমি পাকিস্তানকে আমার সেকেন্ড হোমই মনে করি।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ভবনে দু’নেতা আবার বৈঠকে বসেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে মধ্যাহ্নভোজ সারেন যুবরাজ। ইমরান বলেন, সৌদি আরবে প্রায় ২৫ লাখ পাকিস্তানি শ্রমিক রয়েছেন। তারা বর্তমানে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে প্রায় তিন হাজার পাকিস্তানি সৌদির বিভিন্ন কারাগারে বন্দউ। এরা খুবই দরিদ্র, যারা নিজেদের পরিবার-পরিজনকে রেখে সৌদি পাড়ি দিয়েছেন। জবাবে সালমান বলেন, আমি পাকিস্তানকে কখনো না বলতে পারি না। আমাকেই সৌদি আরবে পাকিস্তানের ‘রাষ্ট্রদূত’ মনে করবেন। এরপরই কারাবন্দউ দুই হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে মুক্তির নির্দেশ দেন বিন সালমান।