ঠিকানা রিপোর্ট: ব্রঙ্কস এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের ক্ষতিগ্রস্ত সমাজ এবং পরিবেশে আফিমজাত ড্রাগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে এবং গত বছর নিউ ইয়র্ক সিটিতে ড্রাগ ওভারডোজে প্রায় দেড় হাজার লোকের ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছে। সিটি হেলথ ডিপার্টমেন্টের ২২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়: ২০১৬ সালে ড্রাগ ওভারডোজে সিটিতে ১,৪২৫ জনের জীবন লীলার অবসান ঘটেছিল এবং ২০১৭ সালে তা ৪.৩% বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৪৮৭-এ পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে ২০১৪ সালে সিটিতে ড্রাগ ওভারডোজে প্রাণ হারিয়েছিল ৮০০ জন। আর ২০১৫ সালে তা ৫৭.৮% বৃদ্ধি পেয়ে ৯৪২ হয়েছিল। প্রতিবেদন অনুসারে, ড্রাগ ওভারডোজে মৃত্যুর পরিসংখ্যানের বিচারে প্রথম স্থানে রয়েছে আফ্রিকান-আমেরিকান এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে ল্যাটিনো জনগোষ্ঠী। ২০১৭ সালে ড্রাগ ওভারডোজে সিটিতে প্রতিলাখ আফ্রিকান-আমেরিকানে মারা গিয়েছিল ২৫.৫ জন এবং প্রতিলাখ ল্যাটিনোতে মারা গিয়েছিল ২৩.৯ জন। ওভারডোজে মৃত্যুর হিসাব সংরক্ষণকারী সিটি স্বাস্থ্য বিভাগের ডঃ ডেনিসে পাওনে বলেন, সিটি প্রশাসনের বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এক দশক আগের তুলনায় সিটিতে ওভারডোজে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। ডঃ পাওনে বলেন, ২০১৭ সালের মার্চ থেকে সিটি স্বাস্থ্য বিভাগ প্রায় ১লাখ ৪০ হাজার নালোক্সোন ওভারডোজ-রেস্কিউ কিটস বিতরণ করেছে এবং জরুরি উত্তরদাতা ও চিকিৎসকদের জন্য ওভারডোজ প্রশিক্ষণ বিশেষভাবে জোরদার করেছে।
পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৭ সালে সাউথ ব্রঙ্কসের হাইব্রিজ- মরিসানিয়া এলাকা এবং হান্টস পয়েন্ট- মট হ্যাভেন এলাকায় ওভারডোজ মহামারি চরম আকার ধারণ করেছে এবং হাইব্রিজ- মরিসানিয়া এলাকায় প্রতিলাখে ৪৪ জন এবং হান্টস পয়েন্ট- মট হ্যাভেন এলাকায় প্রতিলাখে ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছে। আর সমগ্র সিটিতে প্রতিলাখে প্রাণ হারিয়েছে ২১.৩ জন। তিনি বলেন, সাউথ ব্রঙ্কসকে একটি স্টেট ধরা হলে তবে ওভারডোজ জনিত মৃত্যুর বিবেচনায় সমগ্র আমেরিকার মধ্যে ভার্জিনিয়ার পরবর্তী স্থানটি দখল করত সাউথ ব্রঙ্কস। প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৭ সালে ভার্জিনিয়ায় প্রতি লাখে ওভারডোজে মারা গেছে ৫২ জন। নিউইয়র্ক সিটিতে দ্বিতীয় স্থান দখলকারী স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে প্রতি লাখে ২০১৭ সালে প্রতি লাখে মারা গেছে ২৭.৩ জন এবং সর্বমোট ওভারডোজে মারা গেছে ১০১ জন। অবশ্য এ সংখ্যা ২০১৬ সালের সংখ্যার চেয়ে ১৮ জন কম। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ আরও জানান যে মৃতদের প্রায় ৫৭% ভাগের জীবন অবসান ঘটেছে প্রাণঘাতি ফেন্টানীলের কারণে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বর্ণনানুসারে, ফেন্টানীল নামক আফিমসমৃদ্ধ সিন্টেথিক অন্যান্য প্রাণঘাতি ড্রাগের চেয়ে ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি ক্ষতিকারক। তারা আরও জানান, ওভারডোজে মৃত্যুর দ্বিতীয় স্থানটি দখলকারী হেরোইন ছিনিয়ে নিয়েছে ৫২% প্রাণ এবং তৃতীয় স্থান দখলকারী কোকেইন ছিনিয়ে নিয়েছিল ৪৯% প্রাণ।
ব্রঙ্কসের ডেমক্র্যাটিক দলীয় সিটি কাউন্সিলঔম্যান ডায়ানা আইয়ালা বলেন, মটি হ্যাভেন এবং হাইব্রিজের সমন্বয়ে গঠিত আমার ডিস্ট্রিক্টে ওভারডোজে মৃত্যুর সংখ্যা আমাকে দারুণভাবে মর্মাহত করেছে। তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আমাদের সিটি আফিমযুক্ত মহামারি প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ভ’মিকা পালন করেছে এবং সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত।