সিটির আরো ৮০ স্কুলে হালাল ফুড চালু

মেয়র অ্যাডামসকে ধন্যবাদ জানাবে মুসলিম কমিউনিটি

ঠিকানা রিপোর্ট : নিউইয়র্ক সিটির আরও ৮০টি স্কুলে হালাল ফুড চালু হয়েছে। এ জন্য সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামসকে ধন্যবাদ জানাতে চাইছে মুসলিম কমিউনিটি। আগামী ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা সিটি হলে গিয়ে মেয়রকে ধন্যবাদ জানাবেন। এ সময় তারা মেয়রের মেয়াদকালেই সিটির সব স্কুলে ব্রেকফার্স্ট ও টিফিনে হালাল ফুডের ব্যবস্থা করার জন্য তার প্রতি দাবি জানাবেন।
এ ব্যাপারে কমিউনিটি লিডার মাজেদা উদ্দিন বলেন, স্কুলে হালাল ফুডের ব্যবস্থা করার জন্য আমি দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছি। ১৯৯০ সালের ঘটনা। স্কুলে হালাল খাবার না থাকায় আমার বাচ্চারা সব খাবার খেতে পারত না। অসুস্থ হয়ে যেত। আমার মেয়ে কেবল পিনাট বাটার খেত, ছেলেও হালাল খাবারের অভাবে স্কুলে না খেয়ে থাকত। সামান্য যা খেত, তা পর্যাপ্ত ছিল না। ফলে তারা অসুস্থ হয়ে প্রায়ই স্কুলে অনুপস্থিত থাকত। ব্রঙ্কসে তারা যে স্কুলে পড়ত, সেই স্কুলের প্রিন্সিপাল আমাকে ডেকে বলেন, তোমার বাচ্চারা প্রায়ই স্কুলে অনুপস্থিত থাকে, এ রকম অনুপস্থিত থাকলে আমি তাদেরকে স্কুলে রাখতে পারব না। তখন আমি তাকে বলেছিলাম, তারা খাবার খেতে পারে না। কারণ তাদের স্কুলে হালাল খাবার নেই। এ কারণে তারা অসুস্থ হয়ে যায়। তুমি হালাল খাবারের ব্যবস্থা করো, তাহলে তারা সুস্থ থাকবে এবং স্কুলে নিয়মিত আসবে। তখন তিনি বলেন, আমি তো একা এটি পারব না। এ জন্য তুমি চিঠি লেখো। সরকার ও সিটির সহায়তা লাগবে। তিনি আমাকে দিয়ে চিঠি লেখান। চিঠির লেখার পর তখনকার মেয়রের সঙ্গেও কথা বলি। সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান বৈঠক করি। তারা আমাকে হালাল ফুডের সমর্থনে পিটিশন দিয়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন। আমি ১৯৯০ সালে হালাল ফুডের সংগ্রাম শুরু করি। এরপর ২০০৭ সাল পর্যন্ত মোট ২১ হাজার মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করি। হালাল ফুডের জন্য জন লু, ডেভিড ওয়েপ্রিনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাই। আমাকে পরামর্শ দেওয়া হয়, এটি চালু করতে হলে সরকারি ফান্ড লাগবে। এ জন্য জিলেবেন ও চাক শ্যুমারের সহায়তা লাগবে।
মাজেদা আরো বলেন, ২০১৩ সালে কুশার যোগ হয়। সেই সময় হালাল ফুডের সঙ্গে কুশারের নাম আসায় আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করা শুরু করি। জুইস কমিউনিটি কুশারের দাবি জানাতে থাকে। মুসলমান কমিউনিটি হালাল ও জুইশ কমিউনিটি কুশার খাবারের চেষ্টা করতে থাকে। ২০১৪ সালে সফলতা আসে। এ বিষয়ে বিল পাস হয়। ২০১৭ সালে ছয়টি স্কুলে, ২০১৮ সালে ৯টি এবং ২০১৯ সালে ১১টি স্কুলে হালাল ফুড চালু হয়। এখন নতুন আরো ৮০টি স্কুলে হালাল ফুড যোগ হলো। সব মিলিয়ে দিনে দিনে এই সংখ্যা বাড়ছে। আমি মনে করি, এখনো এই সংখ্যা কম। সিটির ৮০টি স্কুলের হালাল ফুডের ব্যবস্থা করায় আমরা ১৯ জানুয়ারি সিটি হলের সামনে যাচ্ছি মেয়রকে ধন্যবাদ জানাতে। পাশাপাশি তাকে অনুরোধ জানাব, তিনি যাতে তার মেয়াদকালে সিটির সব স্কুলে ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চে হালাল খাবারের ব্যবস্থা করেন। এ নিয়ে আমরা সংবাদ সম্মেলনও করব। কারণ মুসলমানদের জন্য হালাল ফুড খুবই জরুরি।