প্রণবকান্তি দেব : ঘনিয়ে আসছে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিনক্ষণ। জমে উঠছে প্রচারণা। একই সাথে বাড়ছে উত্তেজনাও। নির্বাচনের বাকি আর সাত দিন। মেয়রপ্রার্থীরা এখন গণসংযোগের পাশাপাশি মতবিনিময় আর পথসভা করে ভোটারদের কাছে নানা পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতির কথা বলছেন।
আধ্যাত্মিক পর্যটন নগরী সিলেটকে নিয়ে মেয়রপ্রার্থীদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা অনেক। গত ১৩ জুন মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট মহানগরীর একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে আগামীর সিলেট নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এক মতবিনিময় সভা।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সাথে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন সিলেটের তরুণ পেশাজীবী ও উদ্যোক্তারা। সভায় উদ্যোক্তারা আগামীর সিলেট নিয়ে তাদের বিভিন্ন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন।
তরুণ পেশাজীবী ও উদ্যোক্তারা শুরুতেই নগরভবন নিয়ে তাদের প্রত্যাশা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড নগরভবন, জনশক্তিকে আরও দক্ষ করা, গ্রিন ও স্মার্ট নগরী গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, কর্মীদের সেবা প্রদানের মানসিকতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধ করার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, একটি স্মার্ট সিটির জন্য অবশ্যই স্মার্ট নগরভবন জরুরি।
নগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতা দূর করার প্রস্তাবের ব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে পূর্বগবেষণামূলক স্যানিটেশন সলিউশনের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। আর জলাবদ্ধতা দূর করতে দখল হওয়া ছড়াগুলো উদ্ধার করে বৃষ্টির পানিপ্রবাহ অবাধ করতে হবে।
এসময় আনায়ারুজ্জামান চৌধুরী নগরবাসীর দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে এবং তাদের সমস্যা সম্পর্কে জানতে ওপেন হাউস ডে’ একটি চমৎকার উদ্যোগ হতে পারে বলে জানান।
এছাড়া আধুনিক বর্জ্যব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্ন নগরী ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের ব্যাপারে বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ, পরিকল্পিত গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু ও যানজট নিরসনে কার্য্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সুরমার নাব্যতা বৃদ্ধি ও অকাল বন্যা প্রতিরোধ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পুরোনো কারগারের জায়গায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় উদ্যান ও একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, কর্মমুখী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন, পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন ও সবুজায়ন, নিরাপদ ও শান্তির নগরী গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতাবৃদ্ধি, প্রস্তুতি ও তদারকি, বিকল্প বিদ্যুতের জন্য সোলার প্ল্যান্ট স্থাপন বা পৃথক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট, মিউজিয়াম স্থাপন ও সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ, সুরমার তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, রাজধানীমুখী দ্রুতগামী ট্রেনের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট ও খেলার মাঠের ব্যবস্থা, উদ্যোক্তা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, নগরীর তারের জঞ্জাল পরিষ্কার ইত্যাদি দাবি উঠে তরুণ সমাজের পক্ষ থেকে।
এদিকে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুলও ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্বাচনী সভা ও জনসংযোগে। এ সময় তিনি নগরে খেলার মাঠ স্থাপন, জলাবদ্ধতা নিরসন, নগরের সৌন্দর্যবর্ধন, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন, যানজট দূর, নিয়মিত মশক নিধন ও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের বিষয়ে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন।
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে পুরো সিলেট নগরীজুড়ে চলছে উৎসবের আমেজ।