সিদ্দিকুর রহমানকে জাকারিয়ার চ্যালেঞ্জ

ঠিকানা রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী। গত ৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে জাকারিয়া চৌধুরীকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়। ইতোমধ্যে আপনি সেই নোটিশের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু সংগঠনের নীতি, আদর্শ, চেতনা, মূল্যবোধবিরোধী কার্যক্রমে আপনার সম্পৃক্ততা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় এবং গত ২৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের উপর অপ্রত্যাশিতভাবে চড়াও ও মারমুখি আচরণ করায় আপনাকে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হলো। এই বহিষ্কারদেশকে চ্যালেঞ্জ করে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গত ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় ২০১১ সালে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই কমিটির কোন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করার এখতিয়ার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতির নেই।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীরর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন বাবুর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আব্দুল হাই জিয়া, সহ সভাপতি হাজী মফিজুর রহমান, মাসুদ হোসেন সিরাজি, আব্দুল কাদের মিয়া, হাজী জামাল উদ্দিন, আলমগীর মিয়া, মোর্শেদা জামান, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল ইসলাম খোকন, সুব্রত তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শিবলি সাদেক শিবলু, মাহফুজুল হায়দার, সুমন মাহমুদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মোর্শেদ খান বদরুল, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন পারভেজ, সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, হাজী জাফর উল্যাহ, এটি এম মাসুদ, এটিএম রানা, সমিরুল ইসলাম বাবলুসহ নিউইয়র্ক সকল বরোর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল আমিন বাবু লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আপনারা জানেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী সংগঠন। যেটি ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী কতৃক গঠিত। গঠনের পর থেকে বহুবার এই সংগঠনটিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের নগ্ন প্রতি হিংসার শিকার হতে হয়েছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার ক্ষমতা বহির্ভূত অযাচিত হস্তক্ষেপ ও নোটিশ প্রদান। যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নামও ব্যবহার করেছেন যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। জাকারিয়া চৌধুরীকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তাই জাকারিয়া চৌধুরীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র ক্ষমতা তাঁদের, অন্য কারো নয়। আপনাদের জ্ঞাতার্থে আরো জানাতে চাই ২০১৫ সালেও সিদ্দিকুর রহমান ও সাজ্জাদ মিলে জাকারিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে এই ধরনের নোটিশ প্রধান করে মহানগর আওয়ামী লীগের উপর অযাচিত হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছিল যা ধোপে টিকেনি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সিদ্দিকুর রহমান জাকারিয়া চৌধুরীকে ভারমুক্ত করে পূর্ণ সভাপতি ঘোষণা করলে জাকারিয়া চৌধুরী গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ জাকারিয়া চৌধুরীকে ভারমুক্ত করার ক্ষমতা একমাত্র দলীয় প্রধানের, সিদ্দিকুর রহমানের নয়। তাই সিদ্দিকুর রহমানের এই অবৈধ নোটিশকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
আপনাদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবারের সকলকে এই সকল অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ জাকারিয়া চৌধুরীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে পুনরায় নির্বাচিত করার জন্য আমরা প্রবাস থেকে একযোগে কাজ করে যাব।
পরিশেষে কমনওয়েলথ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য, বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর ব্যক্তির তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্তি ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মহাশূন্যে যাত্রার শুভক্ষণে প্রধানমন্ত্রীকে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও রক্তিম অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং লন্ডনে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে তারেক জিয়াকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে জাকারিয়া চৌধুরী সিদ্দিকুর রহমানের সাথে কথোপকথনের ভিডিও দেখান।