সুস্বাগত পবিত্র মাহে রমজান

মুহম্মদ শামসুল হক :

শান্তির ধর্ম ইসলামের অসংখ্য ভ্রাতা-ভগ্নি বিশ্বজুড়ে ২৩ জানুয়ারি সোমবার ২০২৩ দিবাগত রাত থেকে মহান আল্লাহর মাস হিসেবে স্বীকৃত রজবের চাঁদ পশ্চিমাকাশে উদিত হওয়ার মুহূর্ত থেকে প্রতিটি ফরজ নামাজের আগে বা পরে ‘আল্লাহুম্মা বারীক্লানা ফী রযবা ওয়া সাবনা ওয়া বাল্লীগনা রমজান’ (হে আল্লাহ, আপনি আমাদের রজব ও শাবানের বরকত দান করুন এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াত বাড়িয়ে দিন) দোয়াটি দীর্ঘ ৫৯ দিন পর্যন্ত তেলাওয়াত করেছিলেন। আগামী ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার বান্দার মাস হিসেবে ঘোষিত পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে তারা আল্লাহর মেহেরবানীতে রমজানে পৌঁছে যাবেন এবং দোয়াটির তেলাওয়াত এক বছরের জন্য বন্ধ রাখবেন। বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় জীবনবিধান হিসেবে স্বীকৃত পবিত্র সুন্নাহ বা হাদিসের বর্ণনা অনুসারে, উল্লিখিত দোয়া তেলাওয়াত আরম্ভকারী কোনো মুসলিম ভ্রাতা-ভগ্নি পবিত্র রমজানে পৌঁছার আগেই ইন্তেকাল করলে মহান আল্লাহ তায়ালা তার বা তাদের আমলনামায় পুরো রমজান মাসের সওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন। এমনতর বাস্তবতায় প্রতিবছরের পবিত্র রজবের চাঁদ উদয় থেকে শুরু করে রমজানের চাঁদ উদয় পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের আগে বা পরে উল্লিখিত দোয়াটি তেলাওয়াতের অনুরোধ রইল।

যাহোক, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে করোনা, ভূমিকম্প, যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জর্জরিত এবং ইসলামের মৌলিক আদর্শচ্যুত বিশ্ব মুসলিমের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণের সুমহান বার্তাসংবলিত পবিত্র মাহে রমজান শুরু হচ্ছে আগামী ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার। পবিত্র রমজানের ফরজ বা বাধ্যতামূলক সাওম সাধনার প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুসলমানরাও লাইলাতুল মিরাজ উপলক্ষে রজব এবং লাইলাতুল বরাত উপলক্ষে শাবান মাসে অনেক নফল রোজা পালন করেছেন।
আরবি সাওম শব্দের বাংলা আভিধানিক অর্থ পুরোপুরি বিরত থাকা বা বর্জন করা। শরিয়তের পরিভাষায় বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার অপরিসীম রহমত এবং অগণিত পুণ্য হাসিলের আশায় একাগ্রচিত্তে সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়তের সঙ্গে যাবতীয় পানাহার ও বৈধ স্ত্রীসম্ভোগ এবং সকল ধরনের অপরাধ সর্বাংশে পরিহার করার নামই সাওম বা রোজা। সাওম সম্পর্কে বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন : ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আ’মানু কুতেবা আলাইকুমুস্ সিয়ামু কামা কুতেবা আলাল্লাজিনা মিন কাবলিকুম লায়াল্লাকুম তাত্তাকুন (হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণের ওপর। আশা যে তোমরা মুত্তাকি হবে (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)। এর থেকে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর উম্মত ছাড়াও প্রত্যেক শরিয়তে এবং পূর্ববর্তী সকল নবী-রাসুলের উম্মতের বেলায় সাওম পালন ফরজ ছিল। অতএব, প্রাপ্তবয়স্ক, সবল-সুস্থ প্রত্যেক নরনারীর জন্য সাওম পালন করা ফরজ বা বাধ্যতামূলক দায়িত্ব।

পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুসারে, সাওম অস্বীকারকারী নিঃসন্দেহে কাফের হবে। আর কোনো ধরনের যুক্তিসিদ্ধ ওজর ব্যতীত ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা শয়তানের প্ররোচনায় সাওম পালন না করলে সে ব্যক্তি ফাসেক ও গোনাহগার হবে। সর্বশ্রেষ্ঠ নবী-রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর উম্মত হিসেবে আমাদের জীবনে পবিত্র রমজানের সাওমের গুরুত্ব বর্ণনাতীত। মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো যুক্তিসিদ্ধ ওজর কিংবা রোগব্যাধি ছাড়া পবিত্র রমজানের একটি সাওম ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেবে, সে রমজান মাস ছাড়া সারা জীবন সাওম পালন করলেও তা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাজ্য সাওমের ক্ষতিপূরণ হবে না (তিরমিজি ও আবু দাউদ)। পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুসারে : সাওম হচ্ছে ঢালস্বরূপ অর্থাৎ পাপপঙ্কিলতায় আচ্ছাদিত বিশ্বচরাচরে যাবতীয় কুপ্রবৃত্তির অহর্নিশ হাতছানির বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ঢাল হচ্ছে সাওম। নিয়মনিষ্ঠ প্রক্রিয়ায় সাওম পালন করলে পানাহারে নিয়মানুবর্তিতার অনুশীলন এবং অতিভোজন এবং রসনা বিলাসের আসক্তির মোহমুক্তি ঘটে। সঠিকভাবে সাওম পালনকারীরা আর্থিক সাশ্রয় ছাড়াও অনাকাক্সিক্ষত রোগব্যাধির হাত থেকে রেহাই পান এবং পরিমিত ভোজনের ফলে তাদের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে। পরিশুদ্ধ ও একাগ্রচিত্তে সাওম পালনের ফলে পারস্পরিক সহানুভূতি, সৌভ্রাতৃত্ব ও মমত্ববোধের উন্মেষ সাধিত হয়। মুখরোচক খাবার গোগ্রাসে গলাধঃকরণকারী বিত্তশালী সাওম পালনকারীরা অর্ধভুক্ত, অভুক্ত ও অনাহারক্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর দুঃখকষ্ট হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারেন। ফলে পরহিতবিমুখ এবং আত্মকেন্দ্রিক সাওম পালনকারীরাও অভাবগ্রস্তদের দুর্দশা লাঘবে উদারহস্তে দান-খয়রাতে অনুপ্রেরণা লাভ করেন। অর্থবহ সাওম পালন মানুষের ধ্যান-জ্ঞান ও চিন্তার জগতে আমূল পরিবর্তন আনয়ন করে এবং আত্মকেন্দ্রিকতার স্থলে বিশ্বজনীনতা, স্বার্থপরতার স্থলে পরার্থপরতা, ভোগ-লালসার স্থলে নির্মোহ সর্বোপরি অপরের প্রতি সহমর্মী ও সমব্যথী হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায়।

স্মর্তব্য, সাওমের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি এবং তাকওয়া বা ফরহেজগারি অর্জন করা। পবিত্র কোরআনে সুরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, লায়াল্লাকুম তাত্তাকূন (যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো)। তাকওয়া মানে আল্লাহভীতি। মোদ্দা কথা, আল্লাহ শাস্তিদানে অত্যন্ত কঠোর এবং আল্লাহর আদেশ অমান্যকারীদের প্রতি আজাব-গজব সম্পর্কে মানুষের অন্তরে ভয়-ভীতি জাগলে তদুপরি আল্লাহর অনুকম্পা লাভের বাসনা মনে জাগ্রত হলে শয়তানের প্ররোচনা কিংবা জাগতিক মোহ মানুষকে প্রলুব্ধ করতে পারে না। আবার ষড়্্রিপুর মোহ এবং জাগতিক অপরাধমুক্তির বহ্নিশিখা সাওম পালনকারীর অন্তরে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকায় তাকওয়া অর্জনও সহজসাধ্য হয়। অনবদ্য কারণে ধৈর্য অনুশীলন, ক্রোধ সংবরণ, আত্মসংযম এবং কৃচ্ছ্রসাধন সর্বোপরি তাকওয়া অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সাওমের অবদান অনস্বীকার্য। অবশ্য সুস্বাদু ও মুখরোচক ইফতারি প্রস্তুতির মহড়া, রসনা বিলাস, টেলিভিশনে যৌন উদ্দীপক নাচ-গান উপভোগ, পরচর্চা, অন্যের প্রতি বিদ্বেষ কিংবা অহেতুক হিংসার মনোবৃত্তি পোষণ ইত্যাদি সাওম পালনকে নিষ্ফল করে এবং যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগি লোক দেখানো প্রহসনে পরিণত করে। তাই পবিত্র রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতসহ সব ধরনের ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানোর শপথ নেওয়া আমাদের প্রত্যেকের ইমানি দায়িত্ব ও কর্তব্য।

সাওমের ফজিলত প্রসঙ্গে বিশ্ব মুসলিমের অবিনশ্বর জীবনবিধান পবিত্র আল কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, রমজান এমন একটি মহিমান্বিত মাস, যে মাসে বিশ্বমানবের অভ্রান্ত পথনির্দেশক, তাদের জন্য পার্থিব জীবনের বিধিবিধান আর হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী আল কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাসটি পাবে, সে যেন সাওম পালন করে। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)। তাই বলা যায়, পবিত্র রমজান মাসে কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার কারণে এ মাসের মহিমা ও মর্যাদা অপরিসীম। মহানবী (সা.) এর ভাষায় আল্লাহ তায়ালা বলেন, আসসাওমু লী ওয়ানা আজজী বিহি অর্থাৎ সাওম কেবল আমারই জন্য এবং আমি স্বয়ং এর প্রতিদান দেব। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)। সর্বশ্রেষ্ঠ নবী-রাসুল মুহাম্মদ (সা.) আরও বলেছেন : যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে এবং আখিরাতে সওয়াবের আশায় একাগ্রচিত্তে সাওম পালন করে, তার অতীত জীবনের যাবতীয় সগিরা গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয় (বুখারি ও মুসলিম)। তিনি আরও বলেছেন, পবিত্র রমজান মাস পাওয়ার পরও যে ব্যক্তি তার অতীতকালীন গোনাহ (সগিরা) মাফ করে নিতে পারেনি, সে নিঃসন্দেহে হতভাগ্য। পবিত্র রমজান মাস ধৈর্য অনুশীলন এবং সবর বা আত্মসংযমের মাস। আর ধৈর্যধারণের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত। পবিত্র রমজান মাসে মুমিনদের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তি সাওম পালনকারীকে ইফতার করালে বিনিময়ে ওই ব্যক্তির সাওমের সমান সওয়াব পাবে। অথচ সাওম পালনকারীর সওয়াবে বিন্দুমাত্র হেরফের বা কমতি ঘটবে না।

সাওমের অনন্য বৈশিষ্ট্য : সাওম বাহ্যিক পরিমাপ এবং বোধশক্তির অতীত বিশেষ শ্রেণির ইবাদত। পরম করুণাময় আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত সাওম পালনকারী এবং লোক দেখানো সাওম পালনকারী বা মেকি রোজাদারের মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয়ের সক্ষমতা কারও নেই। তাই রমজান মাসের প্রতিটি নফলকে অন্য মাসের ফরজের মর্যাদা এবং প্রতিটি ফরজের সওয়াবকে কমপক্ষে ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আবার কোনো কোনো উত্তম কাজের পুণ্য ১০ গুণ, ৭০ গুণ, হাজার গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও মহান আল্লাহ প্রদান করেছেন। পক্ষান্তরে সাওমের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, সাওম আমারই জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব (বুখারি ও মুসলিম)। বিশেষত, ইফতারের আগমুহূর্তের দোয়া কবুলের প্রতিশ্রুতি মহান আল্লাহ প্রদান করেছেন। তাই ইফতারের আগমুহূর্ত আমরা যথাসাধ্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে তৎপর থাকব, ইনশা আল্লাহ! লক্ষণীয়, ফজিলতের বিচারে পবিত্র রমজান মাসকে তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশ রহমতের, দ্বিতীয় অংশ মাগফিরাতের এবং শেষ অংশ জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভের। অতএব, পশ্চিমাকাশে পবিত্র রমজানের চাঁদ উদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই রহমতের অংশ শুরু হবে এবং যাবতীয় বদ-অভ্যাস সর্বাংশে বর্জনপূর্বক একাগ্রচিত্তে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ রহমত লাভে সক্রিয় হব, ইনশা আল্লাহ। স্মর্তব্য, খনি থেকে উত্তোলিত আকরিক সোনাকে আগুনে বারবার পুড়িয়ে যেভাবে খাদমুক্ত এবং বিশুদ্ধ সোনায় পরিণত করা হয়, অনুরূপভাবে হৃদয়ের যাবতীয় পাশবিক প্রবৃত্তি, কাম-ক্রোধ-লোভ ও ইন্দ্রিয়প্রবণতার মূলোচ্ছেদ করেই আত্মার পরিশুদ্ধি আনতে হবে। আর বিশ্ব মুসলিমের আত্মার পরিশুদ্ধি অর্জনের মোক্ষম অবলম্বন হচ্ছে একাগ্রচিত্তে সাওম পালন।

মানুষের স্বভাবসিদ্ধ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য : ভুলত্রুটি আমাদের পার্থিব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমাদের আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদি জননী বিবি হাওয়া (রা.) চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাবেই মহান আল্লাহর হুঁশিয়ারি বেমালুম ভুলে গিয়ে শয়তানের প্ররোচনায় প্রলুব্ধ হয়েছিলেন এবং নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খেয়েছিলেন। তাঁদের উত্তরসূরি হিসেবে আমরাও চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাবেই প্রতিনিয়ত শয়তানের প্ররোচনায় প্রলুব্ধ হচ্ছি এবং জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে অতলস্পর্শী পাপসাগরে ডুবে যাচ্ছি। অবশ্য পশ্চিমাকাশে পবিত্র রমজানের চাঁদ উদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা বেহেশতের সকল দরজা খুলে দেন, দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেন এবং মানুষের চিরশত্রু শয়তানকেও শৃঙ্খলিত করেন। এতৎসত্ত্বেও পবিত্র রমজান মাসেও পরচর্চা বা গিবতসহ সকল ধরনের পাপাচার থেকে আমাদের মুক্তি ঘটে না। আবার অনেকেই নানা অজুহাতে ইচ্ছাকৃতভাবে সাওম পালন না করে শয়তানের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করি। মূলত আমাদের এসব অভিসন্ধি মহান আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে না। নিজেদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত এবং ইচ্ছাকৃত সাওম বর্জনের শাস্তি আমাদেরই ভোগ করতে হবে, কোনো ছলাকলাই কাজে আসবে না। তদুপরি মৃত্যু যেমন অবধারিত এবং অলঙ্ঘ্য সত্য; কর্মানুরূপ ফল এবং পাপানুরূপ শাস্তিও তদ্রƒপ অবধারিত ও অনস্বীকার্য। আর কবরে আমাদেরকে একাকীই আশ্রয় নিতে হবে এবং পার্থিব ক্রিয়া-কলাপের অনুপুঙ্খ জবাবদিহি অবশ্যই করতে হবে। সর্বোপরি মৃত্যুর দিন-ক্ষণ-সময়-ওয়াক্তও আমাদের জানা নেই। তাই আগামী মাহে রমজানের আশীর্বাদ লাভ অনেকের ভাগ্যে নাও জুটতে পারে। এমনতর বাস্তবতায় এবারের পবিত্র মাহে রমজানকে জীবনের আখেরি মাহে রমজান জ্ঞান করে এখন থেকেই একাগ্রচিত্তে সাওম পালনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানোর শপথ গ্রহণ এবং জীবনের পুঞ্জীভূত অপরাধ গোনাহ মার্জনার নিমিত্তে মহান আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করতে হবে। হে রাহমানুর দুনিয়া ওয়া রাহীমুল আখেরাত, তুমি আমাদের প্রতি পবিত্র রমজানের রহমতবারি বর্ষণ করো। আমিন!

লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক।
১৪ মার্চ ২০২৩