সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে কাঁদলেন স্কালোনি

ঠিকানা অনলাইন : চ্যাম্পিয়ন হতে আর মাত্র একটি জয় দরকার আর্জেন্টিনার। স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে এসে অশ্রুসিক্ত নয়নে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন আকাশী-সাদাদের মাস্টারমাইন্ড কোচ লিওনেল স্কালোনি। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে কেঁদেছেন তিনি।

সবশেষ ১৯৮৬ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছর ধরে তৃতীয় শিরোপার অপেক্ষা করছে আলবিসেলেস্তেরা। ২০১৪ সালে খুব কাছেও চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় মেসিদের। ২০১৮ আসরে যাচ্ছেতাই পারফর্ম করেছে আর্জেন্টিনা। আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে মিশন শুরু করেছিল দলটি। দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয় তারা। গ্রুপপর্বের তৃতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না আর্জেন্টিনার।

শেষ মুহূর্তের গোলের জয়ে কোনোরকম শেষ ষোলোয় পৌঁছে লিওনেল মেসিরা। তবে নড়বড়ে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয় রাউন্ড অব সিক্সটিনেই। ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নেয় আগের আসরের রানার্সআপরা। এরপরই রূপকথার ‘কিং মিডাস’ হয়ে আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নেন লিওনেল স্কালোনি। যার জাদুর স্পর্শে বদলে যায় আলবিসেলেস্তেরা। যিনি ভঙ্গুর আর্জেন্টিনাকে খাঁটি সোনা বানিয়ে তুলেছেন।
গত বছর স্কালোনির অধীনে ২৮ বছরের শিরোপা খরা ঘুচিয়ে কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। এরপর ফিনালিসিমায় ইতালিকে হারায় আকাশী-সাদারা। বিশ্বকাপের আগে টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছে স্কালোনির দল। বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি আর্জেন্টিনা কোচ। জয়ের পর কেঁদে ফেলেন তিনি। ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে স্কালোনি বলেন, ‘আবেগপ্রবণ না হওয়ার চেষ্টা করছি। তবে এই মুহূর্তে এটি কঠিন। অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একজন আর্জেন্টাইন হিসেবে সবসময় এই (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার) স্বপ্নটাই দেখেছি। আমরা এই জয় উদযাপন করব। কারণ এটি আমাদের বিশেষ মুহূর্ত। যদিও স্বপ্ন পূরণের চেয়ে এক ধাপ পিছিয়ে এখনো আমরা।’

ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডের প্রশংসা করে স্কালোনি বলেন, ‘শুরুর কিছুক্ষণ খেলা তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠ খুব শক্তিশালী। মার্ক করা কঠিন।’
লিড নেয়ার পর বেশ আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষকে উপরে ওঠার বেশি সুযোগ দিচ্ছিল না স্কালোনির শিষ্যরা। বল হারালেই পুনর্দখলের চেষ্টা করেছেন ডি পল, তালিয়াফিকোরা। স্কালোনি বলেন, ‘তাদের বিপক্ষে এই উপায়েই খেলতে হতো আমাদের। মাঠে যা দরকার তাই করেছি আমরা।’

গ্রুপপর্ব থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল- পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৩টি গোল হজম করেছিল ক্রোয়েশিয়া। সেই দলকে এক ম্যাচেই সমপরিমাণ গোল দিলো আর্জেন্টিনা। বড় ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো পাওলো দিবালাকে মাঠে নামান নির্ভার স্কালোনি। দিবালাসহ ৫ সাব খেলোয়াড় নামান তিনি। স্কালোনি বলেন, ‘ফাইনালের আগে এমন দাপুটে জয় (ক্লান্তি দূর করার) সেরা বিশ্রাম। বেঞ্চে থাকা সবাইকে খেলিয়েছি আমরা, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি বিশ্বাস করি, এই ম্যাচের চেয়েও ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারি আমরা। (ক্রোয়েশিয়া) এমন দলের বিপক্ষে খেলা সহজ নয়। তারা আগের বিশ্বকাপের রানার্সআপ দল।’

ঠিকানা/এসআর