বিশ্বচরাচর ডেস্ক : স্বপ্নের দরজা খুলে গেছে। এখন স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষা। বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা চোখেমুখে ভাসছে মারিয়া মান্দা-আঁখি খাতুনদের। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বের টিকিট নিশ্চিত হওয়ার পরই তো নতুন দিগন্তে পা রাখে বাংলাদেশের ফুটবল। সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ‚ড়ান্ত পর্বে আট দলের মধ্যে সেরা তিনের একটি হতে পারলেই তো নতুন ইতিহাস গড়বে লাল-সবুজের মেয়েরা। যেকোনো পর্যায়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে নাম লেখাবে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডে এশিয়ার সেরা মঞ্চ থেকে প্রথম তিনটি দল খেলবে ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপে। সেখানে চোখ রাখা তহুরা খাতুন-মনিকা চাকমারা গত ৪ মার্চ মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরেছে।
১৫-১৮ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্ব। গত আসরেও খেলেছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। তখন প্রথম বলে পারফরম্যান্সের গ্রাফটা অতটা উর্ধ্বমুখী ছিল না। দেড় বছর ধরে দেশে এবং দেশের বাইরে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে মেয়েদের। বয়স কম হলেও বেশি করে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলায় তারা এখন পরিণত। এবারও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। সাবেক চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়া, জাপান, চীন এবং শক্তিশালী থাইল্যান্ডের মতো দেশের বিপক্ষে লড়তে হবে। আটটি দলকে দুটি গ্রæপে বিভক্ত করা হবে। দুই গ্রæপ থেকে দুটি করে মোট চারটি দল উঠবে সেমিফাইনাল। ফাইনালের দুটি দল এবং তৃতীয় হওয়া দেশই খেলবে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপে। কাগজে-কলমে এবং বাস্তবে বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া অনেক কঠিন বাংলাদেশের জন্য। কারণ এখানে এশিয়ার সেরা দলগুলোই খেলে। দীর্ঘদিন মেয়েদের ফুটবলের সঙ্গে থাকা কোচ ছোটন সেই স্বপ্ন দেখছেন। সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে নিজের মনের চাওয়াটা বললেন বাংলাদেশ নারী দলের এই কোচ, আগে আমাদের সুপার এইটে উঠতে হবে। সেখানে গিয়ে আমরা সর্বস্ব দিয়ে খেলব। চেষ্টা করব সেরা তিনে থাকতে। গতবার আমরা নতুন ছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে লড়াই করেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে গেছি। এবার আমাদের মেয়েরা আরও পরিণত। আশা করি, নতুন কিছু ঘটবে। সুপার এইটে সেরা তিনের একটি হতে পারলে আমরা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলতে পারব।
মিয়ানমারে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে নিজেদের শেষ ম্যাচে চীনের প্রাচীর ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ৩-০ গোলে হেরে গ্রæপ বিতে রানার্সআপ হয়। হারলেও এই ম্যাচে মনিকা চাকমাদের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা ছোট ছোট ভুল না করলে ম্যাচের হিসেবটা অন্য রকমও হতে পারত। তাতে অবশ্য হতাশ নন কোচ ছোটন, এই মেয়েদের পারফরম্যান্সে আমি গর্বিত। তারা অসাধারণ ফুটবল খেলেছে। সত্যিই তো তাই। গ্রæপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ফিলিপাইনকে ০-১০ গোলে বিধ্বস্ত করে লাল-সবুজের দলটি। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মিয়ানমারকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত করে মূল পর্বের টিকিট। দেশে ফেরা মেয়েরা বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না। নেমে পড়তে হচ্ছে অনুশীলনে। ১২-২২ মার্চ নেপালের বিরাটনগরে অনুষ্ঠিত হবে সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। গ্রæপ এতে বাংলাদেশ খেলবে স্বাগতিক নেপাল ও ভুটানের বিপক্ষে। ১৪ মার্চ নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ খেলবে ভুটানের বিপক্ষে।