রাজশাহী : এক কোটি ১৩ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ১৭ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজশাহী রেশম কারখানা আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। রাজশাহীর ঐতিহ্য সিল্ককে টিকিয়ে রাখতে অবশেষে এই কারখানাটিকে নতুন করে চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে রেশম কারখানায় পরীক্ষামূলকভাবে ৬টি তাঁত চালু করা হয়েছে। শুরু হয়েছে আরও ৫টি তাঁত চালুর প্রক্রিয়া। আগামী এক মাসের মধ্যেই এ সব তাঁত চালু হলে কারখানাটি নতুন মাত্রা পাবে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আবদুল হাকিম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া তাঁতগুলো গত কয়েক মাসে ২ হাজার ৬০০ গজ কাপড় উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বলাকা, স্পান সিল্ক থান, কোরা বলাকা, গরদ কাপড় ও থান কাপড়।
অব্যাহত লোকসানের অজুহাত তুলে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর তৎকালীন সরকার রাজশাহী রেশম কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে। এর আগে ২০০১ সালে প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে এই কারখানার ব্যাপক উন্নয়নের জন্য নতুন করে মেশিন কেনা হয়। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মেশিনগুলো সেই থেকে অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। বন্ধ হওয়ার আগে কারখানার মাথায় ছিল এক কোটি ১৩ লাখ টাকা ঋণের বোঝা। অথচ ১৯৬১ সালে রাজশাহী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালের পাশে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর ৪৭১ জন শ্রমিক-কর্মচারী নিয়ে শুরু করা ঐতিহ্যবাহী কারখানাটি ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দাঁড়িয়ে ছিল।
১৯৭৮ সালে কারখানাটি রেশম বোর্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় একের পর এক লোকসানের পালা। পরে আর লাভের মুখ দেখেনি। রেশম বোর্ডের সহসভাপতি সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা গত বছরের জুলাই মাসে পরীক্ষামূলকভাবে কারখানাটি আবার চালু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছরের জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে পাঁচটি তাঁত চালু করেন। স্বল্প পরিসরে হলেও কারখানাটি চালুর ফলে ঐতিহ্যবাহী রেশম শিল্পকে ঘিরে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে রাজশাহীর মানুষ।