ঠিকানা রিপোর্ট : পরিবারের সদস্য, বন্ধু, প্রতিবেশীকে আবিরের রঙে রাঙিয়ে পুরান ঢাকায় উদযাপিত হয়েছে হোলি উৎসব। দোলযাত্রা বা দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের পাশাপাশি, আধুনিক সংযোজন দোল বা হোলি খেলায় গা ভাসিয়েছেন পুরান ঢাকার শিশু থেকে বৃদ্ধ-সব বয়সী মানুষ। একইভাবে গত ৬ মার্চ এই সুদূর প্রবাসেও বাঙালি হিন্দুরা আবিরের রঙে নিজেদের মন রাঙিয়েছেন। এখানে চাইলেও বড় পরিসরে হয়তো তা উদযাপণ করা সম্ভব নয়! তাতে কি হয়েছে। নিউইয়র্কসহ সারা আমেরিকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনে লেগেছিল রঙের বাণ। ঘরে ঘরে নিজেরাই একে অন্যের গায়ে আবির ছিটিয়ে আনন্দ করেছেন। প্রিয় মানুষদের ফোনে কিংবা মেইলে জানিয়েছেন শুভেচ্ছা।
সকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণর পায়ে রঙ মেখে সেই রঙ শরীরে লাগিয়ে শুরু হয় উৎসবের সূচনা।
হিন্দুধর্ম মতে, দোলযাত্রা হিন্দু বৈষ্ণবদের উৎসব। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী এদিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধিকা এবং তার সখীদের সঙ্গে আবির খেলেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি। এ কারণে দোলযাত্রার দিনে আবির রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হন। এ সময় পরস্পর তারা রঙ খেলে আনন্দে মেতে ওঠেন। পূর্বে সন্তুষ্টির আশায় শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধিকার প্রতিমার পায়ে আবির লাগানোর পর বড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের পায়ে আবির লাগিয়ে প্রণাম করার রীতি থাকলেও বর্তমানে তা খেলা ও উৎসবের রূপ নিয়েছে।
শুধুমাত্র ভারত ও বাংলাদেশেই নয়, পাকিস্তান, নেপাল, ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, মরিশাস, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে এই রঙের উৎসবে মাতেন প্রবাসীরা। তাঁদের সঙ্গে এই আনন্দে যোগ দেন অন্যান্য ধর্মের মানুষও। সাধারণত হোলি যে সপ্তাহে পরে, সেই সপ্তাহের শনি ও রবিবার প্রবাসীরা এই উৎসব পালন করেন। কোথাও কোথাও গোটা সপ্তাহ জুড়ে নানা রকম অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়। হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চলে পারস্পরিক মিষ্টি বিতরণ। ব্যবস্থা থাকে দেদার ভুরিভোজেরও। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোয় হোলি উৎসবের নাম ফাগুয়া। এটি পালিত হয় হোলির পর নিকটতম রবিবারে।
দুর্গাপূজর মতোই এই রঙের উৎসব প্রবাসীদের কাছে পরিণত হয় আরো একটি মিলন উৎসবে। এ নিয়ে ফ্লোরিডার ট্যাম্পা বে-র বাসিন্দা অনসূয়া লাহিড়ীর জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও তারা আয়োজন করেন হোলি উৎসবের। এখানকার হোলি উৎসবের আয়োজন করেন মহিলারাই। ট্যাম্পার ট্রপিক্যাল আবহাওয়ার জন্য মার্চ মাসে হোলি উৎসব পালনে কোন সমস্যা হয় না। আমেরিকার শীতপ্রধান শহরগুলিতে হোলি পালন করা বেশ অসুবিধার। বিশেষত, সেখানে জল রং একেবারেই ব্যবহার হয় না। শুধু আবির দিয়েই রং খেলা হয়।