১৩ জানুয়ারি ঢাকা আসছে শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্ট : ‘আমি আবার বাংলাদেশে যাচ্ছি। এটি অনেক আগ্রহের জন্ম দিচ্ছে। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারছি না। অন্য দিকে বাংলাদেশ দুই বছর ধরে ঘরের মাঠে শক্তিশালী। আমাদের জন্য সফরটা বিশাল চ্যালেঞ্জ’ শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের হেড কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই বাংলাদেশ সফরে আসছেন টাইগারদের সাবেক কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে। জানুয়ারির আসন্ন সফর বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছেন হাতুরা। এ জন্য খেলোয়াড়দের অনুশীলনে গাফিলতি বন্ধ করতে অনুশীলনের সময় গান শোনা বন্ধ করা থেকে শুরু করে নানা পরিবর্তন নিয়ে আসছেন সাবেক এ টাইগার বস।দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২৮ ডিসেম্বর সকাল থেকে পুরোদমে লঙ্কান ক্রিকেটারদের নিয়ে অনুশীলন করেন হাতুরা। বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে আয়োজিত ক্যাম্পে অনুশীলন শুরুর দিন সকাল ১০টায় মাঠে চলে আসেন হাতুরাসিংহে। সকাল থেকে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। আলোচনা সেরে বেলা ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুশীলন করেন। প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে হাতুরা বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি আবার বাংলাদেশে যাচ্ছি। এটি অনেক আগ্রহের জন্ম দিচ্ছে। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারছি না। অন্য দিকে বাংলাদেশ দুই বছর ধরে ঘরের মাঠে শক্তিশালী। আমাদের জন্য সফরটা বিশাল চ্যালেঞ্জ।’ শ্রীলঙ্কা ১৩ জানুয়ারি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে। ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেওয়ার পর দুইটি টেস্ট এবং দুইটি টি-২০ খেলবে। শ্রীলঙ্কা সম্প্রতি ভারত সফরে নাকানিচুবানি খেয়ে দেশে ফিরেছে। এ অবস্থা থেকে দলকে উদ্ধার করাই নতুন কোচের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি মনে করেন, শ্রীলঙ্কা এ মুহূর্তে কিছু কিছু কাজ ঠিক করছে না, ‘কয়েকটা জিনিস আমরা ঠিক করছি না, যার কারণে আজ এ অবস্থা। আমাদের স্কিল আছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন, যারা বিশ্বের শীর্ষ পাঁচে উঠার যোগ্যতা রাখেন। যদি তারা প্রতিভার ঠিক ব্যবহার না করেন, তাহলে বুঝতে হবে; ভুল কিছু হচ্ছে।’ অনুশীলনে ক্রিকেটারদের কোনো রকম শৈথিল্য ও গাফিলতা বরদাশত করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হাতুরা। এ জন্য অনুশীলনের সময় ক্রিকেটারদের গান শোনার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, ‘কেউ যদি অনুশীলনের সময় গান শুনতে চায়, ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি চলে যেতে পারে। আগে কী ঘটেছে, সেটা আমি বলতে পারি না। আমি সবাইকে বলেছি, অনুশীলনই সফলতার চাবি। আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে ভালো কিছু করার সুযোগ পাবো।’ কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পর নতুন করে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিচ্ছেন হাতুরা। এ জন্য লঙ্কান গ্রেটদেরও শরণাপন্ন হচ্ছেন তিনি। এ জন্য তার প্রিয় কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে, প্রয়োজন পড়লে মুত্তিয়া মুরালিধরনকেও পরিকল্পনায় রাখছেন বাংলাদেশের সাবেক এ কোচ, ‘কুমার সাঙ্গাকারার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করতে চাই। সে লক্ষ্যে তাকে আমাদের সহায়তা করতে বলব। শুধু সাঙ্গাকারা নয়, আমি মাহেলা ও মুত্তিয়ার মতো সাবেকদেরও চাই। আশা করছি, তারাও আমাদের সঙ্গে থাকবেন। সময়-সুযোগ মতো তারা আমাদের চাহিদা পূরণ করবেন। যাতে রসদ হিসেবে সেগুলো খেলায় প্রয়োগ করতে পারি।’ এ ছাড়া দল ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে ক্ষমতার পুরোটা পেতে লঙ্কান ক্রীড়া আইন বদলের দাবিও তুলেছেন হাতুরাসিংহে। দল নির্বাচনে হেড কোচের কোনো ভূমিকা শ্রীলঙ্কান ক্রীড়া আইনে না থাকলেও হাতুরা চান নিজের মতো করে দল সাজাতে, ‘আমি একাদশ গঠনে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ব চাই। এখানে ক্রীড়া আইন অনুযায়ী একজন কোচের সে এখতিয়ার নেই। তবে নির্বাচনে কোচের ভূমিকার ব্যাপারে তারা আমার অনুরোধ বিবেচনা করছেন।’হাতরিা চমক আনছেন আরও। অস্ট্রেলীয় মনোবিদ ডা. ফিল জন্সিকেও কাজে লাগাতে চান তিনি। এ মনোবিদের সঙ্গে চার বছর তার সঙ্গে কাজ করেছেন হাতুরা। ৩ জানুয়ারি দলের সঙ্গে বসবেন এ অসি ক্রীড়া মনোবিদ। এর আগে খেলোয়াড়দের মানসিক অবস্থা যাচাইয়ের জন্য জরিপ চালাচ্ছেন হাতুরা। সেজন্য অনুশীলনের প্রথম দিনই ক্রিকেটারদের সবাইকে এক সেট প্রশ্ন ধরিয়ে দিয়েছেন।