৩ বাঘের কবল থেকে ২০ ঘণ্টা পর মুক্ত হলেন সুন্দরবনের ৫ বনরক্ষী

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : সবার সামনেই পুকুরে নেমে মিষ্টি পানি পান করল সুন্দরবনের দুটি বাঘ। তখন শুক্রবার দুপুর দুইটা। পানি পান এবং বিশ্রাম শেষে শান্ত ভঙ্গিতে বনে প্রবেশ করল বাঘ দুটি। সামান্য পথ ঘুরে অবস্থান নিল রান্নাঘরের পাশে। সন্ধ্যার পর আরও একটি বাঘ যোগ দেয় সেখানে। এ অবস্থায় রুদ্ধশ্বাস রাত কেটেছে বনরক্ষীদের। সকালে উঠেও দেখেছেন সেই বাঘ। অবস্থান করছিল শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত। ঘটনাটি ঘটেছে ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের সুপতি স্টেশনাধীন চান্দেশ্বর ফরেস্ট অফিসে।

চান্দেশ্বর ক্যাম্পের বনরক্ষী তরুণ মজুমদার জানান, সুন্দরবনে অনেক বছর চাকরি করলেও তারা এমন পরিস্থিতির শিকার হননি কখনো। এর আগে কখনো জনসম্মুখে বাঘ আসতে দেখেননি। প্রকাশ্যে বাঘের এমন অবস্থান তাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বাঘ বনের মধ্যে চলে যাওয়ায় এখন স্বস্তিতে রয়েছেন তারা।

চান্দেশ্বর ফরেস্ট ক্যাম্প ইনচার্জ ফারুক শেখ জানান, শুক্রবার দুপুর দুইটা থেকে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার তাদের প্রায় ২০ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি আরও জানান, প্রথমে বাঘ দুটিকে পুকুরপাড়ে দেখে ভয় পেয়ে যান তারা। তিনিসহ অপর ৪ বনরক্ষী দ্রুত বাসায় ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। বাঘ দুটি পুকুরে নেমে পানি পান শেষে কিছু সময় পুকুরপাড়ে বিশ্রাম নেয়।’

পরে সামান্য পথ ঘুরে এসে অবস্থান নেয় রান্নাঘরের পাশে। সেখানে আরও একটি বাঘ যোগ দেয়। সারা রাত পুকুরপাড়ে এবং রান্নাঘরে অবস্থান করে বাঘ তিনটি। এ অবস্থায় রান্না ও খাওয়াদাওয়াও বন্ধ হয়ে যায় অফিসের ৫ বনরক্ষীর। সকাল বেলাও উঠে দেখেন বাঘ তিনটি অফিসের অদূরে বনে ঘোরাঘুরি করছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে অফিস চত্বর ত্যাগ করে বাঘের দল।

সুন্দরবন ওয়াইল্ড টিমের সদস্য আবুল আসলাম তুহী জানান, প্রজনন মৌসুমে বাঘ এভাবে অস্থির সময় কাটায়। তারা ওই জায়গাটিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার কারণে দীর্ঘ সময় অবস্থান নিয়েছে হয়তো।

শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা সামসুল আরেফিন জানান, যেহেতু বাঘের প্রজনন মৌসুম চলছে, তাই তাদের আচরণ এ রকম হতে পারে। স্বাভাবিক সময়ে বাঘ সাধারণত এ রকম আচরণ করে না। তারা নিঃসঙ্গই থাকতে পছন্দ করে। তিনটি বাঘ শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত চান্দেশ্বর অফিস এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল। তাদের অবস্থান বা চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটানো হয়নি। তারা নিজেরাই আবার বনে ফিরে গেছে। স্থানীয় বনরক্ষীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

ঠিকানা/এনআই