৩ হাজার কোটি টাকা ফিরে গেল!

নিজস্ব প্রতিনিধি : ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতায় তিন হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক সাহায্য ফেরত যাচ্ছে। চার বছর চেষ্টা করে এই ঋণ সহায়তা পাওয়া যায়। উন্নয়ন সহযোগীদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থতার জন্যই এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যবহারের সুযোগ হারাল। এদিকে দীর্ঘ সময় নেওয়ার কারণে প্রকল্প ব্যয়ও হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। ৪ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের ৩ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারিভাবে ১ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের কথা। এখন মোট প্রকল্প ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে।
জার্মানির কেএফডি, ফ্রান্সের এএফডি, ডেনমার্কের ডানিডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইআইবি ঢাকা শহরের বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট লাঘবে ৩ হাজার কোটি টাকার সহজ শর্তের ঋণ সহায়তা দেয়। এ অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ২০১৫ সালে। সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্পের তৃতীয় প্ল্যান্টে এ অর্থ ব্যয় করার কথা। প্রাথমিকভাবে তারা ৪০০ কোটি টাকা ছাড়ও করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের শর্ত ছিল মেঘনা নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখার। সোনারগাঁওয়ে প্রকল্প এলাকায় শিল্পকারখানার বর্জ্য মেঘনা নদীতে পড়ে পানি দূষণ করছে।
তিন বছরেও প্রকল্পের প্রাথমিক কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় উন্নয়ন সহযোগীরা তাদের হতাশা ও অসন্তোষের কথা সরকারকে জানিয়েছে। এ প্রকল্পের জন্য অর্থ ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে মামলা হয়েছে জানিয়ে দাতাদের কাছে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়েছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনো জবাব পায়নি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে প্রদত্ত অর্থও তারা স্থগিত রেখেছে। এমনই অবস্থায় প্রকল্পটির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা শহরে বর্তমানে প্রতিদিন খাওয়ার পানির চাহিদা ২২০ কোটি থেকে ২২৫ কোটি লিটার। এর পায় ৮০ শতাংশ আসে ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। পানি উত্তোলনের ফলে প্রতিবছর পানির স্তর আড়াই থেকে তিন মিটার নিচে চলে যাচ্ছে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এ অবস্থায় ভূ-উপরিস্থিত পানি উত্তোলন, শোধন ও ব্যবহারের জন্য সায়েদাবাদ পানি শোধন প্রকল্প সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দৈনিক ৪৫০ কোটি লিটার পানি ঢাকা শহরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটির গুরুত্ব বিবেচনায় উন্নয়ন সহযোগীদের মনোভাবে পরিবর্তন আনার জন্য উচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে দ্রুততম সময়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এতে আশা দেখছেন না।