৫৮-তে পা রাখলেন‌ ‘সুইং অব সুলতান’ ওয়াসিম আকরাম

ছবি সংগৃহীত

ঠিকানা অনলাইন : ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বোলারদের একজন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। অথচ লাহোরের এই ক্রিকেটার একসময় হতে চেয়েছিলেন টেবিল টেনিস খেলোয়াড়। পরবর্তী সময়ে তিনি হয়ে ওঠেন বিশ্বের সর্বকালের সেরা বাঁ-হাতি পেসার। ১৯৬৬ সালে জন্ম নেওয়া ওয়াসিম আকরাম আজ (৩ জুন) ৫৮ বছরে পা দিয়েছেন।

প্রথম শ্রেণির কোনো ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়াই টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ওয়াসিম আকরামের। এরপর যা হয়েছে তা তো ইতিহাসই। দুর্দান্ত গতি, ভয়-জাগানিয়া বাউন্সার, অনিন্দ্যসুন্দর সুইং, অবিশ্বাস্য ইয়র্কার ও চাবুকে অ্যাকশনে তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের এক অনন্য পেসার -‘সুইং অব সুলতান’। ২০ বছর আগে ক্রিকেট ছাড়লেও ২২ গজের কীর্তি এখনো তাকে স্মরণীয় করে রেখেছে।

অথচ একসময় তিনি হতে চেয়েছিলেন টেবিল টেনিস খেলোয়াড়। পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট তার জীবন পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। পারিবারিকভাবে তেমন সমর্থন পাননি এই গতিতারকা। সেই প্রসঙ্গে নিজের আত্মজীবনী ‌‘ওয়াসিম’-এ লিখেছেন, ‘লাহোরে বসবাস ছিল আমাদের। বাবা ছিলেন খুচরা যন্ত্রপাতি বিক্রেতা। বাবা-মার চিন্তা ছিল শুধুই আমাদের পড়াশোনা নিয়ে। তাই যত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব তা দিয়ে একটা ভালো স্কুলে ভর্তি করালেন। ১২ বছর বয়সে আমি মায়ের সাথে থাকতে শুরু করি, নানির বাড়িতে। আমার বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল। স্কুলে সব ধরনের খেলাই খেলতাম। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ জন্মায় যখন ক্লাস নাইনে উঠি।’

১৯৮৪ সালে প্রতিভা অন্বেষণের জন্য একটি ট্রায়ালের আয়োজন করা হয়েছিল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। সেখানে অংশ নেন ওয়াসিম আকরাম। তার বোলিং দেখে মুগ্ধ হয়ে যান পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যান জাভেদ মিঁয়াদাদ। এর পরই তিনি আকরামকে সুযোগ দেওয়ার দাবি তোলেন। সুযোগ পেয়েও যান ওই বছরই।

পাকিস্তান দলে মাত্র ১৮ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয়ে যায় আকরামের। কিন্তু প্রথম ম্যাচে মুগ্ধতা ছড়ানো বোলিং করতে পারেননি। সেই ওয়ানডেতে মাত্র ৪ ওভার বোলিং করে ৩১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন আকরাম।

পরের ম্যাচে বলই হাতে পাননি। কিন্তু নিজের জাতটা আকরাম চিনিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। দুই টেস্টের তিন ইনিংসে বোলিং করে ১২ উইকেট নিয়েছেন সাবেক ফাস্ট বোলার। সেই যে উইকেট পাওয়া শুরু, আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি অনেক উইকেট নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯১৬ উইকেট পেয়েছেন আকরাম। কিন্তু ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাওয়া তার দুটি উইকেট হয়তো পাকিস্তানিরা ভুলতে পারবে না কোনো দিন। যে দুটি ডেলিভারিকে সেই সময়ের ধারাভাষ্যকাররা বলেছিলেন, ‌‘সিম্পলি আনপ্লেয়েবল’।

একই বছরেই আকরাম তার আদর্শ ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। এখনো তিনি পাকিস্তানের হয়ে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার। বর্তমানে তিনি পিএসএলে কোচিংয়ের দায়িত্বে আছেন।

ঠিকানা/এনআই