
গ্র্যামির মঞ্চে তিনি থাকবেন কেউ ঘুণাক্ষরেও সেটা টের পাননি। সবাইকে চমকে দিয়ে সেই মঞ্চে উপস্থিত হলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। সঙ্গীত তাকে কিভাবে এগিয়ে নিয়েছে, শুনিয়েছেন সেই গল্প। পুরস্কারের বাইরে তার উপস্থিতি আর সঙ্গীত থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়ার গল্প আরও সম্মানিত করেছে উপস্থিত শিল্পীদের। গত ১১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে রাতে লস অ্যাঞ্জেলেসের স্টেপলস সেন্টারে বসে সঙ্গীতের সবচেয়ে বড় সম্মাননা অনুষ্ঠান গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসের ৬১তম আসর।
লেডি গাগা, জাদা পিনকেট স্মিথ, জেনিফার লোপেজ এবং উপস্থাপক অ্যালিসিয়া কিস মঞ্চে থাকা অবস্থায় কথা বলতে বলতে গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসের মঞ্চে আবির্ভূত হন মিশেল ওবামা। তাকে দেখে সবাই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মিলনায়তনজুড়ে। একপর্যায়ে মিশেল বলেন, ‘ঠিক আছে, অনুষ্ঠানটি শেষ করতে হবে।’ মিশেল আরও বলেন, “বিয়ন্সের গাওয়া ‘হু রান দ্য ওয়ার্ল্ড’ গানটি আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। সঙ্গীত সব সময় আমাকে নিজের কথা বলতে সাহায্য করেছে। আমার বিশ্বাস, সেটা এখানে উপস্থিত সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কান্ট্রি মিউজিক, রক, র্যাপ যে গানই আমরা পছন্দ করি না কেন; অন্তত নিজেদের রুচিটা অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে পারি। সঙ্গীতের মাধ্যমে নিজেদের মর্যাদা, দুঃখ, আশা ও আনন্দের কথা বলতে পারি আমরা। এই মাধ্যমে আমরা একে অন্যকে বলতে পারি, ওই গানটা শুনেছ?’’
বিজয়ী তালিকা
সেরা অ্যালবাম : ক্যাসি মাসগ্র্যাভস
(গোল্ডেন আওয়ার)
সেরা রেকর্ড : চাইল্ডিস গ্যামবিনো
(দিস ইজ আমেরিকা)
সেরা গান : চাইল্ডিস গ্যামবিনো
(দিস ইজ আমেরিকা)
সেরা নতুন শিল্পী : ডুয়া লিপা
সেরা পপ (একক) গান : লেডি গাগা (জোয়ান)
সেরা পপ (দ্বৈত/দলীয়) গান : লেডি গাগা ও ব্র্যাডলি কুপার (শ্যালো)
সেরা ট্র্যাডিশনাল পপ অ্যালবাম : উইলি নেলসন (মাই ওয়ে)
সেরা পপ অ্যালবাম : আরিয়ানা গ্রান্ডে (সুইটেনার)
সেরা ড্যান্স রেকর্ডিং : সিল্ক সিটি ও ডুয়া লিপা ফিচারিং ডিপলো ও মার্ক রনসন (ইলেকট্রিসিটি)
সেরা ড্যান্স/ইলেকট্রনিক অ্যালবাম : জাস্টিস (ওম্যান ওয়ার্ল্ডওয়াইড)
সেরা রক পারফরম্যান্স : ক্রিস কর্নেল
(হোয়েন ব্যাড ডাজ গুড)
সেরা মেটাল পারফরম্যান্স : হাই অন ফায়ার (ইলেকট্রিক মেসাইয়া)
সেরা রক অ্যালবাম : গ্রেটা ভ্যান ফ্লিট
(ফ্রম দ্য ফায়ারস)
সেরা অলটারনেটিভ অ্যালবাম : বেক (কালারস)
সেরা আর অ্যান্ড বি পারফরম্যান্স : এইচ ই আর ফিচারিং ড্যানিয়েল সিজার
সেরা আরবান কনটেম্পরারি অ্যালবাম : দ্য কার্টারস (এভরিথিং ইজ লাভ)
সেরা র্যাপ সং : ড্র্যাক (গড’স প্ল্যান)
সেরা র্যাপ অ্যালবাম : কার্ডি বি
(ইনভেশন অব প্রাইভেসি)
সেরা কান্ট্রি অ্যালবাম : ক্যাসি মাসগ্র্যাভস (গোল্ডেন আওয়ার)
সেরা মিউজিক্যাল থিয়েটার
অ্যালবাম : দ্য ব্র্যান্ড’স ভিজিট
প্রডিউসার অব দ্য ইয়ার : ফ্যারেল উইলিয়ামস
সেরা মিউজিক ভিডিও : চাইল্ডিস গ্যামবিনো (দিস ইজ আমেরিকা)
এ আর রহমানের সঙ্গে হাবিব-তাহসান
‘গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড দেখতে আসা সার্থক’। এমনই ক্যাপশনের একটি ছবি পোস্ট করেছেন দেশের জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী। এমন ক্যাপশন দেয়ার অযৌক্তিক কারণ নেই কেননা উপমহাদেশের বর্তমান সময়ের অন্যতম মিউজিশিয়ানের সাথে সাক্ষাৎ তো আর যা-তা কথা হতে পারে না।
আর হ্যাঁ, বরেণ্য এই ভারতীয় মিউজিশিয়ানকে কাছে পেয়ে নিজের মোবাইল ক্যামেরায় যুগল ছবি তুলতে মোটেও ভুল করেননি। তিনি আল্লাহ রাখা খান। শুধু হাবিব ওয়াহিদ নয়, গ্র্যামি আসরে গিয়েছেন বাংলাদেশের আরেক শীর্ষ সঙ্গীতশিল্পী তাহসান খান।
দেখা গেল তাহসানও বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন। আর হ্যাঁ উপমহাদেশের অস্কারজয়ী সঙ্গীতজ্ঞর সঙ্গে ছবি তুলতে ভোলেননি তাহসান। নিজের ফেসবুকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে সেসব পোস্ট করে ভক্তদের জানালেন।
এবারের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাঞ্জেলসের স্টেপলস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের হাবিব ছাড়াও অংশ নিয়েছেন সঙ্গীত তারকা তাহসান। দুজনই এখনও লস অ্যাঞ্জেলসে রয়েছেন।
এ আর রহমানের পুরো নাম আল্লাহ রাখা রহমান। তিনি একজন ভারতীয় তামিল যিনি ভারতের বলিউড ও কলিউড (তামিল চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি) এর জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক। তিনি প্রচুর হিন্দি এবং দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। তার পিতার নাম কে আর শেখর। মুসলমান হিসেবে ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে এ আর রহমানের নাম ছিল এ এস দিলীপ কুমার। তার কাজগুলো ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে ইলেকট্রনিক মিউজিক এবং ওযার্ল্ড মিউজিক এবং পশ্চিমা অর্কেস্ট্রাল মিউজিকের সম্মিলনের জন্য বিখ্যাত। তার পুরস্কার গুলো মধ্যে রয়েছে দুটি অস্কার, একটি বাফটা পুরস্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব, চারটি ন্যাশনাল ফিল্ম এওয়ার্ড এবং ১৩টি ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ড।