কার হাতে কী পুরস্কার
২০১৭ ছিল হিন্দি সিনেমার দুঃস্বপ্নের বছর। শাহরুখ খান, সালমান খান, কঙ্গনা রানাওয়াতের মতো তারকাদের ছবি ফ্লপ করেছে। হাতে গোনা কয়েকটি ছবি ছিল আলোচনায়। সেগুলোই বাজিমাত করেছে ফিল্মফেয়ারে। যেমন- ‘হিন্দি মিডিয়াম’। ইরফান খান অভিনীত ছবিটি মুক্তির আগে থেকেই ছিল ব্যাপক আলোচিত। একটা কারণ পাকিস্তানি অভিনেত্রী সাবা কামারের উপস্থিতি, অন্যটা বাংলা ছবি ‘রামধনু’র সঙ্গে মিল থাকার অভিযোগ। তবে মুক্তির পর দারুণ গল্প আর ইরফান খানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছাপিয়ে যায় সেসব। ফিল্মফেয়ারে সেরা ছবি হয়েছে এটিই। রাজ বাত্রা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হয়েছেন ইরফান। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকোনের কোনো হিন্দি ছবি মুক্তি পায়নি। কঙ্গনার দুটি ছবিই ডাহা ফ্লপ। সেরার দৌড়ে বড় তারকার মধ্যে শুধু ছিলেন আলিয়া ভাট আর বিদ্যা বালান। ‘তুমহারি সুলু’তে রেডিও জকি সুলোচনা দুবের চরিত্র করে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার গেছে বিদ্যার কাছেই। সেরা পরিচালক হয়েছেন ‘বেরেলি কি বরফি’র অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি; যদিও অনেকেই ভেবেছিলেন ‘টয়লেট : এক প্রেমকথা’র জন্য এই পুরস্কার পাবেন শ্রী নারায়ণ সিং।
মিউজিক্যাল থ্রিলার হিসেবে বেশ আলোচিত ছিল ‘জগ্গা জাসুস’। এই ছবির জন্য সেরা সংগীত পরিচালক ও সেরা গীতিকার হয়েছেন দুই বাঙালি- প্রীতম চক্রবর্তী ও অমিতাভ ভট্টাচার্য। সেরা গায়ক ও গায়িকা অরিজিৎ সিং ও মেঘনা মিশ্র।
তেমন কাউকে না পাওয়ার জন্যই কিনা, সেরা নবাগত অভিনেতা-অভিনেত্রী হিসেবে এবার কাউকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি। তবে বহুল প্রশংসিত ‘আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ’-এর জন্য সেরা নবাগত পরিচালক হয়েছেন কঙ্কণা সেনশর্মা।
‘বেরেলি কি বরফি’, ‘নিউটন’, ‘ট্র্যাপড’, ‘শাদি ম্যায় জরুর আনা’র জন্য বছরজুড়ে আলোচিত ছিলেন রাজকুমার রাও। জনপ্রিয় ক্যাটাগরিতে সেরা পার্শ্ব-অভিনেতা হয়েছেন তিনি [বেরেলি কি বরফি]। তবে ‘নিউটন’-এর জন্য সমালোচকদের দৃষ্টিতে ঠিকই সেরা অভিনেতা হয়েছেন। সমালোচকদের দৃষ্টিতে সেরা অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসিম [সিক্রেট সুপারস্টার] হওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। বেশির ভাগ গণমাধ্যমে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, ‘আনারকলি অব আরাহ’র জন্য এই পুরস্কার পাবেন স্বরা ভাস্কর।
এবারের ফিল্মফেয়ারে সবচেয়ে বেশি ১০টি করে মনোনয়ন পেয়েছিল ‘জগ্গা জাসুস’ ও ‘সিক্রেট সুপারস্টার’। মূল অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি চারটি পুরস্কার নিয়ে ঘরে ফিরছে ‘জগ্গা জাসুস’।
ফের উপেক্ষিত অক্ষয়
আগের বছরও টানা হিট ও সমালোচক প্রশংসিত ছবি দিয়েও উপেক্ষিত ছিলেন অক্ষয় কুমার। এবারও তা-ই। তিন ছবি ‘জলি এলএলবি ২’, ‘নাম শাবানা’ আর ‘টয়লেট : এক প্রেমকথা’ আলোচিত হলেও অভিনেতার ভাগ্যে জোটেনি পুরস্কার।
পারফরম্যান্স
ফিল্মফেয়ারের অন্যতম আকর্ষণ ছিল সানি লিওনের পারফরম্যান্স। ‘রইস’-এর হিট আইটেম গান ‘লায়লা ম্যায় লায়লা’র তালে সানি যখন মঞ্চ কাঁপাচ্ছেন, আক্ষরিক অর্থেই তখন জেগে উঠেছিল পুরো মিলনায়তন। নিজের বিভিন্ন গানের তালে কালো পোশাকে শাহরুখের পারফরম্যান্সও ছিল দারুণ। এ ছাড়া মিস ওয়ার্ল্ড মানসী চিল্লার হঠাৎই মঞ্চে এসে অবাক করে দেন। আরো পারফরম করেছেন অক্ষয় কুমার, পরিণীতি চোপড়া প্রমুখ।
লাল গালিচায়
শহিদ কাপুর, প্রীতি জিনতাসহ অনেকেই লাল গালিচায় নজর কেড়েছেন। তবে সবচেয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন রণবীর সিং। ‘আজুবা’, ‘দিওয়ার’, ‘রাম লক্ষ্মণ’- বিভিন্ন বিখ্যাত ছবির পোস্টারের অনুকরণে পোজ দেন তিনি।
সেরা অভিনেতা : ইরফান খান [হিন্দি মিডিয়াম]
সেরা অভিনেত্রী : বিদ্যা বালান [তুমহারি সুলু]
সেরা ছবি : হিন্দি মিডিয়াম
সেরা পরিচালক : অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি [বেরেলি কি বরফি]
সেরা পার্শ্ব-অভিনেতা : রাজকুমার রাও [বেরেলি কি বরফি]
সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রী : মেহের বিজ [সিক্রেট সুপারস্টার]
সেরা গায়ক : অরিজিৎ সিং [রোকে না রুকে ন্যায়না, বদ্রিনাথ কি দুলহানিয়া]
সেরা গায়িকা : মেঘনা মিশ্র [নাচদি ফিরা, সিক্রেট সুপারস্টার]
সেরা সংগীত পরিচালক : প্রীতম [জগ্গা জাসুস]
সেরা অভিনেতা [সমালোচক] : রাজকুমার রাও [ট্র্যাপড]
সেরা অভিনেত্রী [সমালোচক] : জায়রা ওয়াসিম [সিক্রেট সুপারস্টার]
সেরা ছবি-পরিচালক [সমালোচক] : নিউটন, অমিত মাসুরকর
আজীবন সম্মাননা : বাপ্পী লাহিড়ী ও মালা সিনহা
উপস্থাপক : করণ জোহর ও শাহরুখ খান