নিজস্ব প্রতিনিধি : এরশাদের জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি দলগতভাবে হয়। সে ক্ষেত্রে তাদেরকে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী দিতে এবং প্রার্থী ও দলগতভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি শেষাবধি নির্বাচনে এলে নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন হবে জোটগতভাবে বৃহত্তর সমঝোতার ভিত্তিতে। বিষয়গুলো এখন আর তত্ত্ব বা ভাবনাগত নয়। বিকল্প চিন্তা থেকে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা অনেকটা আগাম প্রস্তুতিমূলক।
দলীয়ভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সঙ্গে মহাজোটগত আসন ভাগাভাগির নির্বাচনের চিন্তা থেকে জাতীয় পার্টি দলীয় প্রার্থিতা স্থির করছে। নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে নিতে একাধিক কমিটি গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টি। এ পর্যন্ত সাত বিভাগে সাতটি কমিটি করা হয়েছে। পার্বত্য জেলাগুলো নিয়ে তাদের মধ্যে অস্থিরতা নেই। ভাবনা, দুর্ভাবনাও খুব একটা নেই। প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এসব কমিটিকে জেলা ও বিভাগওয়ারি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের স্থানীয় নেতা, সংগঠক, কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জনসাধারণের মতামতের ভিত্তিতে তারা সম্ভাব্য তালিকা করছেন। জনপ্রিয়তা যাচাই করে তিনজনের নাম অগ্রাধিকারভিত্তিক তালিকাভুক্ত করছেন। সাংগঠনিক অবস্থা, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, কর্মী ও এলাকার ভোটারদের সঙ্গে সম্পর্ক, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আর্থিক অবস্থা প্রভৃতি বিবেচনায় নেওয়া হয়। তাদের পর্যবেক্ষণ সমীক্ষায় পার্বত্য জেলাগুলোসহ ২০০ আসনের মধ্যে এ পর্যন্ত ১১০টির বেশি আসনে যোগ্য, জনপ্রিয় ও সম্ভাবনাময় প্রার্থী পেয়েছেন। তারা বিপুল সম্ভাবনাময় বলে তাদের পর্যবেক্ষণ। এই আসনগুলো নিয়ে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সঙ্গে দর-কষাকষি করার পরিকল্পনা করছে। তবে ৮০টি আসনে তারা প্রতিযোগিতায় আসার মতো প্রার্থীই পাচ্ছে না।
অন্যদিকে সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৫টির বেশি আসন পাবে না। তা-ও আওয়ামী লীগ ছাড় দিলেই কেবল তা হবে। সমঝোতার নির্বাচনের ক্ষেত্রে চার হতে পাঁচটি নির্বাচনী এলাকায় আসনসংখ্যা বাড়তেও পারে। অর্থাৎ সর্বাধিক ২০টি আসন পাবে জাতীয় পার্টি। মাঠপর্যায়ে কর্মরত এবং প্রকৃত সঠিক তথ্য সংগ্রহকারী সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার এ-সংক্রান্ত তথ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যবধান নেই।
গোয়েন্দাদের সরেজমিন পর্যবেক্ষণভিত্তিক তথ্যমতে, রংপুর জেলা ও শহরসহ বৃহত্তর রংপুরেই এরশাদের জাতীয় পার্টির এক-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। রওশন এরশাদ, জি এম কাদের, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার, সালমা ইসলামসহ প্রেসিডিয়ামের হাতে গোনা কয়েকজনের বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে ছাড় দিলেই কিছু ব্যতিক্রম হবে।